বোনাস শেয়ার কাকে বলে: এই নিয়ে হরহামেশাই অনেকেই জানার আগ্রহ প্রকাশ করে থাকেন। তাই আজকের আর্টিকেলে আমরা আলোচনা করব- বোনাস শেয়ার কি? বোনাস শেয়ার বলতে আসলে কি বোঝায় এবং আরো বিস্তারিত। তো সুপ্রিয় পাঠক বন্ধুরা, আসুন জেনে নেই বোনাস শেয়ার কাকে বলে এবং এর খুঁটিনাটি আরো গুরুত্বপূর্ণ বিষয়াবলী সম্পর্কে। আরও পড়ুনঃ মূলধন কাকে বলে ?
বোনাস শেয়ার কি?
কোম্পানির বর্তমান শেয়ারহোল্ডারদের মালিকানাধীন শেয়ারের সংখ্যার উপরে ভিত্তি করে যে নির্দিষ্ট অনুপাতে বিনামূল্যে শেয়ার দেওয়া হয়ে থাকে সেটাই হল বোনাস শেয়ার।
বোনাস শেয়ার কাকে বলে?
প্রতিষ্ঠান শেয়ার মালিকদের নগদ লভ্যাংশ বন্টন না করে যখন লভ্যাংশ বাবদ অতিরিক্ত শেয়ার পূর্ব মালিকানার শেয়ার সংখ্যা অনুপাতে বন্টন করে থাকে তখন তাকে বোনাস শেয়ার বলে। যেটাকে কখনো কখনো স্টক লভ্যাংশ নামেও সম্বোধন করা হয়। সুতরাং আরেকটু ভিন্নভাবে বললে বলা যায় কোনরকম বাড়তি মূল্যের পরিবর্তে যখন আজকের শেয়ার হোল্ডারদের মধ্যে অতিরিক্ত শেয়ার বন্টন করা হয় তখনই সেটা বোনাস শেয়ার।
আরও পড়ুন; প্রকল্প কাকে বলে | প্রকল্প কি | প্রকল্পের বৈশিষ্ট্য, ধরন ও জীবনচক্র
বোনাস শেয়ার কেন দেওয়া হয়ে থাকে?
খুবই গুরুত্বপূর্ণ একটি প্রশ্ন হলোঃ বোনাস শেয়ার কেনই বা দিয়ে থাকে সেসব কোম্পানিগুলো? তাদের উদ্দেশ্যই বা কি? দেখুন কেউ কখনো কাউকে শুধু শুধু তাদের নিজস্ব অর্থ প্রদান করবে না এটা আপনি এবং আমি আমরা সকলেই জানি। তাই এর পেছনে নিশ্চয়ই কোন উদ্দেশ্য রয়েছে। আর সেই উদ্দেশ্যটা হল কোম্পানির ব্যবসার প্রসারণ ঘটানো। মূলত কোম্পানির ব্যবসার প্রসারনের ক্ষেত্রেই এই বোনাস শেয়ারের ব্যবস্থাটা গ্রহণ করা হয়। এটা কোম্পানির সজ্জিত লাভ, যা নগদ মূল্যে শেয়ার হোল্ডারদের মধ্যে বিতরণ করা হয় না বরং তা ফ্রী সেয়ারে রূপান্তর করে বিতরণ করা হয়।
আরও পড়ুনঃ মূলধন বাজেটিং কাকে বলে
বোনাস শেয়ার কিভাবে হিসাব করা হয়
একটা কোম্পানি তার ব্যবসা প্রসারণের প্রয়োজনে সঞ্চিত একাংশকে মূলধনে রূপান্তর করে। পরবর্তীতে যে পরিমাণ অর্থ মূলধনে রূপান্তর করা হয় তার সমপরিমাণ অর্থের শেয়ার প্রদান করা হয় সেই গ্রাহককে। মূলত পুঁজিবাজারে তালিকাভুক্ত এই কোম্পানিগুলো বছর শেষে তাদের বিনিয়োগকারীদের লভ্যাংশ প্রদান করেন।
বোনাস শেয়ার ইস্যু করা হয় কাকে?
বোনাস শেয়ার প্রদানের জন্য যে মাধ্যমটা অবলম্বন করা হয় সেটাই হচ্ছে বোনাস শেয়ার ইস্যু। আমরা ইতিমধ্যে আপনাদেরকে জানিয়েছি- কোম্পানি তার ব্যবসা প্রসারনের প্রয়োজনে তাদের সুদৃত একাংশ কে প্রথমত মূলধনের রূপান্তর করে। আর তারপর যে পরিমাণ অর্থ মূলধনের রূপান্তর করা হয় তার সমপরিমাণ অর্থের শেয়ার প্রদান করে সেই গ্রাহককে। আর সেই সমপরিমাণ অর্থ প্রদান করাটাই হচ্ছে শেয়ার ইস্যু। যেটি আনুপাতিক হারে বিতরণ করা হয় শেয়ার হোল্ডারদের মধ্যে।
এবার আসুন বিষয়টি একটি উদাহরণের মাধ্যমে খুবই সহজভাবে বুঝে নেওয়া যাক। ধরুন- আপনি টেসলা কোম্পানির কাছ থেকে শেয়ার কিনেছেন আর সেই কোম্পানি একটি নির্দিষ্ট সময় পর সিদ্ধান্ত নিল কোম্পানির শেয়ার হোল্ডার থেকে ২:১ অনুপাতে বোনাস শেয়ার করবে।
সুতরাং আপনার কাছে যদি দুইটি টেসলা কোম্পানির শেয়ার থাকে তাহলে আপনি একটি শেয়ার পাবেন সে পর্যায়ে আপনার মোট শেয়ারের পরিমাণ দাঁড়াবে তিনটিতে। ঠিক একইভাবে আপনার কাছে যদি ১০ টি শেয়ার থাকে তাহলে আপনি আরো পাঁচ পাঁচটি অতিরিক্ত শেয়ার পাবেন তখন আপনার শেয়ার সংখ্যা দিয়ে দাঁড়াবে ১৫ তে। আর এভাবেই মূলত যে কোন কোম্পানি তাদের নির্দিষ্ট নির্ধারিত অনুপাতে বোনাস শেয়ার করে থাকে।
আরও পড়ুনঃ বাজার কি, বাজার কাকে বলে
বোনাস শেয়ারের সুবিধা ও অসুবিধা সমূহ
আসুন এ পর্যায়ে জেনে নেই বোনাস শেয়ারের আসলে সুবিধা সমূহ কি আর এর অসুবিধাই বা কি?
সুবিধা সমূহ:
- বোনাস শেয়ার শেয়ার হোল্ডারদের জন্য বিনামূল্যে। তাই অর্থের প্রয়োজনীয়তা নেই। কারণ সেগুলো কোম্পানির দ্বারা জারি করা হয়।
- বোনাস শেয়ার কোম্পানির ব্যবসায় এবং ক্রিয়া কলাপে একজন বিনিয়োগকারীর আস্থা তৈরি করতে সাহায্য করে।
- বোনাস শেয়ার কোম্পানির দীর্ঘমেয়াদি শেয়ারহোল্ডারদের জন্য উপকারী বলে বিবেচিত হয়।
- কোম্পানি থেকে বোনাস শেয়ার গ্রহণের সময় বিনিয়োগকারীদের কোন কর প্রদান করতে হয় না।
- বোনাস শেয়ার ইস্যু করা কোম্পানিগুলোকে এমন অনেক পরিস্থিতি থেকে বেরিয়ে আসতে সুবিধা প্রদান করে যেখান থেকে তারা শেয়ার হোল্ডারদের নগদ লম্বাংশ দিতে পারবে না।
- বাজারে বোনাস শেয়ার ইস্যু করার সাথে কোম্পানিগুলোর বেশি ফ্রি ফ্লোটিং শেয়ার রয়েছে।
- বোনাস শেয়ার ইস্যু করা কোম্পানির মূল্য বৃদ্ধি করে।
এক কথায়- কোম্পানির দৃষ্টিকোণ থেকে বোনাস শেয়ারের সুবিধা একরকম এবং বিনিয়োগকারীদের দৃষ্টিকোণ থেকে বোনাস শেয়ার এর সুবিধা আরেক রকম।
আরও পড়ুনঃ রাইট শেয়ার কি | রাইট শেয়ার ইস্যু করার পদক্ষেপ | রাইট শেয়ার ইস্যু করার সুবিধা
অসুবিধা সমূহ:
এ পর্যায়ে আমরা বোনাস শেয়ার এর অসুবিধা সমূহ তুলে ধরব, যেটা কোম্পানির দৃষ্টিকোণ থেকে আলাদা আবার বিনিয়োগকারীদের দৃষ্টিকোণ থেকেও আলাদা। সেগুলো হলো:
- যখন একটা কোম্পানি লভ্যাংশ দেওয়ার পরিবর্তে বোনাস শেয়ার ইস্যু করতে থাকে তখন ইস্যু করা বোনাসের খরচ বছরের পর বছর ধরে বাড়তে থাকে।
- বোনাস শেয়ার ইস্যু করার জন্য কোম্পানি কোন প্রকার নগদ অর্থ লাভ করতে পারেন না।
- ঠিক একইভাবে একজন বিনিয়োগকারির দৃষ্টিকোণ থেকে বোনাস শেয়ারের মালিকানার কোন সুবিধা নেই।
পরিশেষে: পাঠক বন্ধুরা, বোনাস শেয়ার কাকে বলে এ সম্পর্কিত আর্টিকেল টি এখানেই শেষ করছি। আশা করি আপনারা আপনাদের কাঙ্খিত প্রশ্নের উত্তর পেয়ে গেছেন। তো সবাই ভালো থাকবেন সুস্থ থাকবেন আল্লাহ হাফেজ।
আরও দেখুনঃ
- অতিরিক্ত জেলা ও দায়রা জজ কার্যালয়ে নিয়োগ ২০২৩
- এইচএসসি পাসে বাংলাদেশ শিপিং কর্পোরেশন নিয়োগ বিজ্ঞপ্তি ২০২৩
- জনোবল নিয়োগ দেবে বাংলাদেশ হাই-টেক পার্ক কর্তৃপক্ষ, বেতনস্কেল- ১৬,০০০ থেকে ৩৮,৬৪০/-
- স্থানীয় সরকার প্রকৌশল অধিদপ্তরে মৌখিক পরীক্ষার সময়সূচি প্রকাশ ২০২৩
- বাংলাদেশ ব্যাংকে সহকারী পরিচালক (জেনারেল) পদের চূড়ান্ত ফলাফল প্রকাশ ২০২৩